পিরোজপুরে বঙ্গমাতা সেতুর উদ্বোধন

উন্নয়নের অদম্য গতিকে অব্যাহত রাখতে চায় সরকার: প্রধানমন্ত্রী

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০১:৫৮

বঙ্গমাতা সেতুর উদ্বোধন

পিরোজপুরের কচা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেতুর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ের চামেলী হল প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সেতুটির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সবসময় অবহেলিত। তাই তাদের অবস্থার উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করেছি। পদ্মা সেতুসহ দক্ষিণাঞ্চলে অনেক সেতু, কালভার্ট নির্মাণ করেছি।

তিনি বলেন, কঁচা নদীতে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগে আর কোনো বাধা থাকছে না। পিরোজপুরে প্রচুর পেয়ারা হয়। আমরা এখন থেকে ঢাকা বসেই খুব দ্রুত এই জেলার মজার পেয়ারা খেতে পারবো।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই অঞ্চলের এক ইঞ্চি জমিও যেনও অনাবাদি না থাকে। সারাদেশের মানুষকে পানি, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হতে হবে। বিশ্বে মন্দা দেখা দিয়েছে, আমাদের আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। দক্ষিণাঞ্চরের মানুষকে উৎপাদনমুখী হতে হবে। আমরা লবণাক্ত জমিতে ধান রোপণের জাতও উদ্ভাবন করেছি। আমরা আমাদের খাবার নিজেরাই উৎপাদন করবো।

এদিকে, সেতুটি উদ্বোধনে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের এক নবদিগন্ত উন্মোচিত হলো। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় সেতুটি ঘিরে কচা নদীর দুই তীরের মানুষ উচ্ছ্বাসে ভাসছে। সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির পরিসমাপ্তি ঘটবে। বাঁচবে ফেরি পারাপারের সময়।

সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাসুদ মাহামুদ বলেন, পিরোজপুর সদর ও কাউখালী উপজেলার মধ্যবর্তী কচা নদী দিয়ে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কটি বিচ্ছিন্ন ছিল। ফেরি পার হতে ৩০ মিনিট লেগে যেত। নদীর স্রোত তীব্র আকার ধারণ করলে সময় আরও বেশি লাগত।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুটির নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন। ৯৯৮ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৩ দশমিক ৪০ মিটার প্রস্থের সেতুতে ১০টি পিয়ার ও ৯টি স্প্যান রয়েছে।

৮৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চায়না রেলওয়ে ১৭ ব্যুরো গ্রুপ লিমিটেড নামের একটি চীনা প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণ করে। এরমধ্যে ৬৫৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা চীন সরকার ও বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকারের।

আগে সেতুটির নাম ছিল বেকুটিয়া ব্রিজ। পরবর্তীতে সেতুটির নামকরণ করা হয় বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু। এ সেতুটির মাধ্যমে রাজধানী থেকে বেনাপোল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হবে।

বরিশাল বিভাগীয় সদরের সঙ্গে খুলনা বিভাগীয় শহরের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনসহ কুয়াকাটা সাগরসৈকত, পায়রা সমুদ্রবন্দর, মোংলা সমুদ্রবন্দর, বেনাপোল ও বাংলাবান্দা স্থল বন্দরকে সেতুটি সরাসরি সড়ক সংযুক্ত করবে।

সেতুটির অবস্থান রাজাপুর-নৈকাঠী-বেকুটিয়া-পিরোজপুর জেলা সড়কে। পাশাপাশি পদ্মা সেতুর সুবাদে দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য এ সেতুটি বিশেষ সুবিধা সৃষ্টি করবে। সড়ক পথে বরিশাল-খুলনা আঞ্চলিক এ মহাসড়কটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের হলেও যান চলাচলে সময় লাগত চার ঘণ্টা। কঁচা নদীর বেকুটিয়া পয়েন্টে সেতুটি চালুর পর এ সময় এক ঘণ্টা কমে আসবে, থাকছে না ফেরির বিড়ম্বনা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top