জাতীয় পার্টির সঙ্গে ফরমাল কোনো আলোচনা হয়নি

রাজনীতি যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করছে বিএনপি: মির্জা ফখরুল

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:৫৮

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করছে বিএনপি। তিনি বলেন, পুলিশ আমোদের প্রতিপক্ষ নয়। সরকার যখন পুলিশকে ব্যবহার করে, তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। বাংলাদেশ থেকে চিরকালের জন্য সহিংসতা বন্ধ করার একটি মাত্র পথ হচ্ছে— নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আবারও চালু করা।

মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ বলে— তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে নেই। সংবিধান পরিবর্তন করেই তো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংযুক্ত করা হয়েছিল। আমরাই সংবিধান বদল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার করেছিলাম। আবার আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে তা বাতিল করেছে। এখনও আপনাদের সংসদে মেজরিটি আছে, সুতরাং খুব সহজে সংবিধান পরিবর্তন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংযুক্ত করুন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইতিহাস যেটা বলে, এ ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে এবং জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কোনো সরকারই বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। ফ্যাসিবাদী সরকারগুলো দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকে। এবার বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে যে, খুন-গুমের মধ্যেই মানুষ জেগে উঠেছে।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের এখনও ফরমাল কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা যুগপৎ আন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছি, আন্দোলনের মাধ্যমেই ভবিষ্যতে কী হবে তা নির্ধারিত হবে। আলোচনার দরজা খোলা আছে, রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি সংগঠন যারাই এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে তাদের সঙ্গে নিয়েই আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব।

মির্জা ফখরুল বলেন, বারবার বলার চেষ্টা করেছি যে পুলিশ প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠান। তার মৌলিক দায়িত্বগুলো হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাশকতা বন্ধ করা। কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশের দায়িত্ব একটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে নির্দেশ আসে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দেওয়া।

তিনি বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ, হামলা করছে আওয়ামী লীগ আর সেখানে পুলিশ বাদী হয়ে উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীর নামে মামলা দিচ্ছে। সরকার চাইলেই একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে। আমাদের দাবি একটাই— পরিবেশ তৈরি করো, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করো, ভোটাররা তাদের যেন পছন্দের প্রতিনিধিকে বেছে নিতে পারেন।

মন্ত্রীরা বলছেন পুলিশের ওপর আঘাত করলে তারা কী চুপ করে বসে থাকবে?— এর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশকে কখনো আক্রমণ করা হয়নি। পুলিশ আগ বাড়িয়ে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সশস্ত্র যারা হামলা করে তাদের সহায়তা করতে গিয়ে ঘটনা ঘটেছে। আমাদের দলের ছেলেরা গুলিতে মারা যাচ্ছেন, কেউ চোখ হারাচ্ছেন, আহত হয়েছেন অসংখ্য। মামলার ভয়ে অনেকেই আহত হওয়ার কথা বলে না, হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে থাকতে চায় না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংবিধান পরিবর্তন করেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান করা হয়েছিল আবার সংবিধান তারাই পরিবর্তন করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে আসে। এখন যেহেতু আপনারা আপনাদের দুই তৃতীয়াংশ মেজরিটি সংসদে তাই সেটা ফিরিয়ে আনা আপনাদের জন্য সহজ। দেশের জন্য মানুষের জন্য এবং বাংলাদেশকে একটি চিরস্থায়ী সহিংসতা থেকে বন্ধ করার একমাত্র পথ নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ নীতি নিয়ে সরকারের বিধান চালু করা।

 

 

 

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top