ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সেন্টমার্টিনে ১৩ ট্রলারডুবি
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৩৫
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে। ভোর থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে সেখানে। প্রচণ্ড বেগে বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো ও দমকা হাওয়া। এরফলে বেশকিছু গাছপালা ভেঙে যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটেছে। ডুবে গেছে ঘাটে নোঙর করা ১৩টি ফিশিং ট্রলার।
স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকেই জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বীপের চারপাশে। এলাকার কিছু কিছু জায়গায় পানিও ঢুকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ডুবে গেছে ঘাটে নোঙর করা ১৩টি ফিশিং ট্রলার। এরমধ্যে একটি মানুষ পারাপারের বোটও রয়েছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে শিগগিরই খাদ্য সংকট দেখা দেবে দ্বীপে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, গাছপালা ভেঙে পড়ার কারণে প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ট্রলারও ডুবে গেছে। লোকজনকে নিরাপদে রাখার জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় কাজ চলছে।
অপরদিকে, সেন্টমার্টিনে আটকা পড়া ৪ শতাধিক পর্যটককে রোববার বিকেলে পর্যটকবাহী জাহাজের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয়। এই মুহূর্তে সেখানে কোন পর্যটক আটকে নেই বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান। তবে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক টিমের প্রধান মাহে আলম সোহাগ বলেন, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) পাঁচটি দল মাঠে রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে। প্রচারণায় মাইকিংও করা হচ্ছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। দুর্যোগের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জেলায় ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে ৬ লাখ ৫ হাজার ২৭৫ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোলা হয়েছে ৯টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০৪টি মেডিকেল টিম।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বর্তমানে কক্সবাজার বন্দরকে ৬নং সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আজ মধ্যরাত থেকে দমকা হাওয়াসহ ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। এ সময় বাতাসে সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটার। উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ১০-১২ ফুট বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে, বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। এর প্রভাবে সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা দেশের অধিকাংশ জায়গায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড় ধসও হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।