আন্দোলনের নামে অরাজকতা করলে উচিত শিক্ষা দেয়া হবে

বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে খালেদাকে ফের জেলে পাঠানো হবে: প্রধানমন্ত্রী

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৪ নভেম্বর ২০২২, ০৮:২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সরকার-বিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি বাড়াবাড়ি করে, তবে খালেদা জিয়াকে আবারও জেলে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জেলহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ এজন্য তার ভাই-বোন এবং বোনের জামাই আমার কাছে আবেদন করেছে তাকে বাড়িতে রাখার জন্য। এ জন্য মানবিক কারণে তার সাজা স্থগিত করে বাড়িতে থাকার সুযোগ করে দিয়েছি। এখন যদি বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করে, তাহলে আবার তাকে জেলে পাঠিয়ে দেব।

শেখ হাসিনা বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের দুর্নীতি মামলা বেগম খালেদার জিয়ার ৭ বছরের সাজা হয়েছে। চ্যারিটেবল ট্রাস্টের টাকা সে মেরে খেয়েছে। তার নিজের নামেই রেখে দিয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের মামলা, সেই অরফানেজের নামে বিদেশিদের মোটা অঙ্কের টাকা এসেছিল। একটা টাকাও কোনো এতিম পায়নি, ওই ট্রাস্টেও কোনো টাকা যায়নি।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ধরা খেয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলা আমরা দিইনি। এটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছে। তখন তার প্রিয় ব্যক্তিরাই ক্ষমতায় ছিল। তাদের দেওয়া মামলা, আর সেই মামলায় সাজা পেয়েছে খালেদা জিয়া। বরং আমরা তাকে মানবিক কারণে তাকে বাসায় থাকতে দিয়েছি।

সরকার প্রধান বলেন, খালেদা জিয়ার আমলে কয়টা সরকার ছিল? প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটা আর হাওয়া ভবনে একটা। তারা দেশের কোনো উন্নয়ন করেনি। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করলাম। তখন ৪০ লাখ মেট্রিকটন খাদ্য ঘাটতি ছিল। এতে বোঝাই যায় খালেদা জিয়া তার আমলে কোনো ফসলই উৎপাদন করতে পারেনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর খুনিরা থেমে যায়নি। তারা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছিল। কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্ত্র নিয়ে ঢোকা যায় না। কিন্তু, তারা অস্ত্র নিয়ে ঢুকেছিল। গণভবন থেকে সেই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। খুনি মোশতাক-জিয়াই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। জিয়া এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল বলেই মোশতাক রাষ্ট্রপতি হয়েই জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধান বানিয়েছিল।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ৩ নভেম্বর চার নেতাকে হত্যার পর মানুষ বুঝে ফেলেছিল এটা বাংলাদেশের ইতিহাসকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র। জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে পাকিস্তানের যোগসাজশে হত্যাকারীদের লিবিয়ায় আশ্রয়ণের ব্যবস্থা করা হয়।

বিএনপির সাম্প্রতিক গণতন্ত্র উদ্ধার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দলের জন্ম অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে; তারা আবার গণতন্ত্র কী উদ্ধার করবে, সেটাই আমার প্রশ্ন। 

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বিএনপির দলটিতে মাথা কোথায়? তারা তো সবাই পলাতক ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এরা ক্ষমতায় এলে, দেশটাকে কোথায় নেবে, তা কী ভেবেছে দেশবাসী? আর যারা এদের (বিএনপি) কথায় নাচে, তারা জ্ঞান-বুদ্ধি কোথায় রাখে আমি বুঝতে পারি না।

আন্দোলনের বিষয়ে বিএনপি নেতাদের সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের নামে কোনো অরাজকতা করলে তাদের উচিত শিক্ষা দেয়া হবে। বিএনপি যদি আর একটা মানুষের গায়ে হাত দেয় তাহলে তাদের ছাড়া হবে না। যেমন কুকুর, তেমন মুগুর না হলে তো চলবে না!

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top