মামলার পর প্রথম আলোর সাংবাদিককে আটক

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৩, ২৩:১২

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, মামলা করার পরই প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে বেসরকারি রিহ্যাবিলেটেশন সেন্টারের মধ্যে অনুদান বিতরণ ও বার্ষিক ড্রাগ রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই তথ্য জানান।

প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে একজন গণমাধ্যম কর্মীর বিচারের সুযোগ থাকলেও শামসুজ্জামানকে কেন রাতে তুলে নিতে হলো জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি কারো বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হয়, থানায় মামলা করে পুলিশ তখন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি প্রথম আলোর ওই সাংবাদিকের (সাংবাদিক শামসুজ্জামান) বিরুদ্ধে থানার অভিযোগ ছিলো। তারই অংশ হিসেবে সিআইডি তাকে আটক করে নিয়ে গেছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আপনারা যেভাবে বলছেন, আমি পরিষ্কার করে এর উত্তর দিতে পারছি না। কারণ, আমার কাছে সব রিপোর্টগুলো এখনো আসেনি। আমি বিভিন্নভাবে যতটুকু অবগত হয়েছি, এই মামলাকে কেন্দ্র করে, খুব সম্ভবত কিছু একটা ঘটনা ঘটেছে, আমি এখনো পরিষ্কার নই। আমি পরিষ্কার হয়ে আপনাদের জানাতে পারব। তবে প্রথম আলোর সাংবাদিক যে সংবাদ করেছেন, এটা সঠিক ছিল না।

'আমরা মনে করি, স্বাধীনতা দিবসে আমরা এতদূর এগোনোর পরে এই ধরনের একটা ভুয়া নিউজ যদি কেউ দেয়, যে কেউ সংক্ষুব্ধ হতে পারে,' যোগ করেন তিনি।

এরআগে, বুধবার ভোরে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে তার সাভারের ভাড়া বাসা থেকে সিআইডি পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের আমবাগান এলাকা থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আজ ভোর ৪টার দিকে তিনটি গাড়িতে মোট ১৬ জন শামসুজ্জামানের বাসার সামনে যান। এর মধ্যে তার বাসায় ঢোকেন ৭ থেকে ৮ জন। কিছু সময় পর শামসুজ্জামানকে নিয়ে তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় যান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলছেন, বটতলার নুরজাহান হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন, একজন নিরাপত্তা প্রহরী, শামসুজ্জামানসহ মোট ১৯ জন ব্যক্তি সেহরি করেন। ভোর পৌনে ৫টার দিকে বটতলা থেকে তারা আবার শামসুজ্জামানের বাসায় যান।

সেখানে উপস্থিত একাধিক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, আমরা শামসুজ্জামান ভাইকে দেখতে পেয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে চাই। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমাদের একপাশে নিয়ে অন্য দিকে যেতে অনুরোধ করেন। এ ছাড়া শামসুজ্জামান পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার বলেও জানান তিনি।

গত ২৬ মার্চ মূল্যবৃদ্ধির কারণে ভুক্তভোগী মানুষদের নিয়ে ‘সবই ঠিক আছে, কিন্তু সব কিছুর দাম বেশি, এখন জীবন অনেক কঠিন’ শিরোনামে শামসুজ্জামানের এই প্রতিবেদন আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। সেই ঘটনার কয়েকদিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top