ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্যসহ আট জন আহত
প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে
রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০২৩, ২১:৪১
বঙ্গবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া শাখার কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার। এরআগে, মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোর ৬টা থেকে আগুনে পুড়ছিল বঙ্গবাজারের বেশ কয়েকটি মার্কেট। ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বললেও ঘটনাস্থলে বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। বঙ্গ মার্কেটের বেশিরভাগ দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বঙ্গবাজারে অন্তত ছয়টি মার্কেটে আগুন লাগে। এরমধ্যে শুধু বঙ্গ মার্কেটেই ২৯০০ দোকান এবং সেখানে কাজ করেন প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
বঙ্গবাজার মার্কেট, ইসলামিয়া মার্কেট, বঙ্গ ১০ কোটি মার্কেট, আদর্শ মার্কেট- এই চারটি মার্কেট এক জায়গায় হওয়ায় মূলত সবগুলোকেই লোকজন বঙ্গবাজার মার্কেট হিসেবে ডেকে থাকেন। এখান থেকে রাস্তার উল্টো পাশে এনেক্সকো ও বঙ্গো হোমিও মার্কেটেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল।
মঙ্গলবারের এই অগ্নিকাণ্ডে ১২ হাজারের ওপরে দোকান পুড়ে গেছে বলে ধারণা করছেন ব্যবসায়ীরা। এর ফলে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে তারা আশঙ্কা করছেন।
বঙ্গবাজারের এনেক্সকো টাওয়ারে রাশেদ বেডিং দোকানের এক ব্যবসায়ী বলেন, শুধু বঙ্গবাজার কাঠের মার্কেটে দুই টিনশেড মার্কেটে দোকান আছে আট হাজার। ওই মার্কেট সম্পর্ণ পুড়ে গেছে। এমন কোনও দোকান নেই যে সেটি পোড়েনি। এই মার্কেটে দোকানের নম্বরই রয়েছে ১২ হাজার। বঙ্গবাজারের এনেক্সকো টাওয়ারে ৫ থেকে ৭ তলা পর্যন্ত পুড়েছে। সেখানে প্রত্যেক তলায় ১১৫টির মতো দোকান রয়েছে।
এদিকে, আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্যসহ আট জন আহত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এসেছেন। তাদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এরআগে, মঙ্গলবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজারে আগুনের সূত্রপাত হয়। বঙ্গবাজার থেকে আশপাশের আরও চারটি মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট কাজ করে।
একপর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দেয় বিজিবি-বিমান-নৌ ও সেনাবাহিনী। তবে তাদের পানি সংকটে পড়তে হয়। পানি সংকটের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে পানি নেওয়া হয়। দীর্ঘ পাইপে পানি নেওয়ার কারণে চাপ না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত ঘটেছিল।
অন্যদিকে হাতিরঝিল থেকে পানি নেয় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার। কয়েক দফায় হেলিকপ্টারে করে হাতিরঝিল থেকে পানি নেওয়া হয়েছিল।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।