ঢাবিতে মির্জা ফখরুলের কুশপুত্তলিকা দাহ, কিন্তু কেন?

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ১২ জুলাই ২০২৩, ০২:৫০

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হিট অফিসারকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কুশপুত্তল দাহ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীরা। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নারী শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মির্জা ফখরুলের কুশপুতুল দাহ করা হয়। কুশপুতুল দাহের সময় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘বিএনপি বয়কট’সহ মির্জা ফখরুলকে নিয়ে স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।

নারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘কথা বলা’ শিখতে আহ্বান জানিয়ে কর্মসূচিতে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিয়া সুলতানা কথা বলেন, মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই, আপনি নিজে একজন বয়স্ক লোক হয়ে নিজের মেয়ের বয়সের একজনকে কীভাবে বলতে পারেন আপনি তাকে দেখে হিটেড হয়ে যান। এ রকম একজন লোক একটা দলের মহাসচিব কীভাবে হয় সেটাই আমাদের প্রশ্ন। কীভাবে কথা বলতে হয় সেটা আপনাকে শিখতে হবে। না পারলে নারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আপনি এসে শিখে যান কীভাবে কথা বলতে হয়।

যতদিন পর্যন্ত মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা না চাইবেন ততদিন পর্যন্ত প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন বলেও জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের এই নেত্রী।

ঢাবির বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কোহিনূর আক্তার রাখী বলেন, বিএনপি মহাসচিব বয়সের সাথে তার চিন্তাশক্তিও হারিয়ে ফেলছেন। মির্জা ফখরুল একটি মেয়েকে নিয়ে যে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তা কেবল কোনো নির্দিষ্ট মেয়েকে নয়, গোটা বাংলাদেশের নারী সমাজকেই অপমান করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

রাখী বলেন, মির্জা ফখরুলের বক্তব্য শুধু কুরুচিপূর্ণই নয়, তার চিন্তাভাবনাও নিচু মনের। তাদের রাজনৈতিক দলের যে দৈন্য– তারা নারীদের কতটা ছোট করে দেখে তারই প্রতিফলন ঘটেছে এই বক্তব্যে। তিনি যেন নারী সমাজের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।

তিনি আরও বলেন, যখন শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, সেই জায়গায় মির্জা ফখরুল কীকরে এই মন্তব্য করেন। তিনি যেন আরও সাবধান হয়ে কথা বলেন।

গভার্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকলিমা আক্তার প্রভাতী বলেন, ‘মির্জা ফখরুলরা কখনোই নারীর অগ্রযাত্রায় বিশ্বাস করেন না। লুটতরাজ, জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদী নারী বিদ্বেষের কারণে বহু আগেই এ দেশের নারী সমাজ বিএনপি-জামায়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনেও নারী সমাজ তাদের বয়কট করবে।

বক্তব্য প্রদানকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাল্গুনী বলেন, বিএনপি মহাসচিব যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আসলে নারী জাতিকে সম্মান দিতেই শিখেননি। তার পূর্বসূরিরাও তা দিতে পারেননি, তিনিও দিতে পারছেন না এবং তার উত্তরসূরিরাও দিতে পারবেন না

এর আগে, ৮ জুলাই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় মির্জা ফখরুল বলেন, শুনলাম বিদেশ থেকে ছেলেমেয়েদের নিয়ে এসে সিটি করপোরেশনে চাকরি দেয়, হিট অফিসার পদে। এখন আমরা যে হিটেড হয়ে গেলাম, আমরা যে ডেঙ্গু-চিকনগুনিয়া-করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলাম; কোনো স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে তো ‘হিটেড-বুটেড’ হয়ে যাচ্ছি। এসব থেকে আমাদের বের হতে হবে।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top