ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কপি পেস্ট সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৩১ আগষ্ট ২০২৩, ০১:০২

ছবি: সংগৃহীত

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম ও কিছু ধারা পরিবর্তন করে নতুন যে সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া করা হয়েছে, সেখানে প্রকৃতপক্ষে কিছুই পরিবর্তন হয়নি। 

বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কপি পেস্ট। এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল আইন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সরকার প্রমাণ করেছে যে, এটি একটি ‘কালো আইন’। সাইবার নিরাপত্তা না দিয়ে এই আইন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করছে। যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কার্যকর হয়, তখন আমরা এটা বাতিল করতে বলছিলাম।

এবার যখন সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া বানানো হলো, সেটিও একই রকম রয়েছে। শুধু কিছু অংশে পরিবর্তন আছে, যা পরিষ্কার নয়। অনেক ক্ষেত্রে হুবহু কপি পেস্ট করা হয়েছে। এই আইন যদি এভাবে পাস হয়, তাহলে আবার এটাকে বাতিল করার আহ্বান করবো।

তিনি বলেন, এই খসড়া আইনের প্রক্রিয়া ও বিবেচনা উভয়ই বিতর্কিত। এই সরকারের আমলে একটা ইতিবাচক দিক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে কোনো আইন পরিবর্তন বা পরিমার্জনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হতো। তবে এই আইনের বেলায় তা নেওয়া হয়নি। শুধু ১৪ দিনের সময় দিয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। এখনো সুযোগ আছে মতামত নেওয়ার।’

টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনে আগের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো দুর্বলতা রয়ে গেছে। দুর্বলতা বললে কম হয়ে যায় অর্থাৎ যেসব কারণে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ ছিল আগের আইনে, নতুন খসড়াতেও সেসব বিষয় রয়ে গেছে।

যার মধ্যে অন্যতম বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এই বিষয়গুলো খর্ব করার মতো অনেক উপাদান এই খসড়া আইনে রয়ে গেছে। যদিও শাস্তির পরিমাণ কমানো হয়েছে, এতে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু অন্যদিক থেকে এটা বিবর্তনমূলক আইন হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা আশা করবো সরকারের কাছে সংশ্লিষ্ট অংশীজন যারা আছেন, যারা বিশেষজ্ঞ, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আছে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে সাইবার সিকিউরিটি আইনের যেমন চর্চা থাকে, যেমন উদ্দেশ্য থাকে সব বিষয় বিবেচনা করে এই আইনের খসড়াকে ঢেলে সাজাতে হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের মূল যে উদ্দেশ্য সেখানে কিন্তু মানুষের বাক স্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করে এমন বিষয় থাকার কথা নয়। যদি আমরা মত প্রকাশের নামে বা তথ্য প্রকাশের নামে কারও অধিকার হরণ করি, কারও মানহানী করি এর জন্য কিন্তু আমাদের প্রচলিত আইন আছে। প্রচলিত আইনে বিচার হতে পারে। সাইবার সিকিউরিটি আইনে এই বিচার করার দরকার আছে বলে আমরা মনে করি না।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সাইবার সিস্টেমকে নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টি এখানে সেভাবে না রেখে মানুষ যে তার মত প্রকাশ করবে, চিন্তা প্রকাশ করবে, মন্তব্য করবে সেই জায়গাটা হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে এই খসড়া আইনে। এটি যেহেতু এখনও খসড়া অবস্থায় আছে তাই আমরা মনে করি এটিকে এখনও ঢেলে সাজানোর সুযোগ আছে।

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top