এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: তৃতীয় দিনে টোল আদায় ২৫ লাখ টাকা
শাকিল খান | প্রকাশিত: ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:২৬
সর্বসাধারণের জন্য ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়ার তৃতীয় দিনে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করেছে ৩০ হাজারের বেশি গাড়ি। এসব গাড়ি থেকে ২৫ লাখ টাকার বেশি টোল আদায় করা হয়েছে।
এ এসব গাড়ির মধ্যে বিমানবন্দর থেকে বনানী, মহাখালী, ফার্মগেট পথে ১৫ হাজার ৬৯০টি, কুড়িল থেকে বনানী, মহাখালী ও ফার্মগেট পথে ৩ হাজার ৬১৯টি, বনানী থেকে কুড়িল-বিমানবন্দর পথে ২ হাজার ৮৯৮টি এবং তেজগাঁও থেকে মহাখালী, বনানী, কুড়িল ও বিমানবন্দরের পথে ৮ হাজার ৭১২টি গাড়ি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করেছে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যানচলাচল শুরুর প্রথম টোল আদায় হয়েছিল ১৮ লাখ ৫২ হাজার টাকা। দ্বিতীয় দিনে ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৪০ টাকার টোল আদায় হয়েছে। অর্থাৎ ৩ দিনে টোল আদায় হয়েছে ৬৫ লাখ ৫৬ হাজার ৭২০ টাকা।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর রোববার সকাল থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশ। এই অংশের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে বিমানবন্দরের পাশে কাওলা থেকে ফার্মগেট আসতে সময় লাগছে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে টোল। এতে সর্বনিম্ন টোল ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। চার শ্রেণির যানবাহনের মধ্যে কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাকের (৩ টনের কম) টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা। সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। মাঝারি ধরনের ট্রাকের (৬ চাকা পর্যন্ত) টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২০ টাকা এবং বড় ট্রাকের (৬ চাকার বেশি) ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ওপর দিয়ে থ্রি হুইলার, সাইকেল এবং পথচারীরা চলাচল করতে পারবে না। আর মোটরসাইকেল এখনই চলতে দেয়া হবে না। এছাড়া গাড়ি নিয়ে উড়ালসড়কে দাঁড়ানো ও ছবি তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এর আগে, ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি এ প্রকল্পের প্রথম চুক্তি সই করা হয়। এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে সংশোধিত চুক্তি সই হয়।
প্রকল্পটি থাইল্যান্ড ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড ৫১ শতাংশ এবং চায়না ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শোনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনোমিক গ্র্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ৩৪ শতাংশ ও সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড ১৫ শতাংশ যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্পের মূল দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিমক ৭৬ কিলোমিটার। র্যাম্পসহ মোট দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮৯৪০ কোটি টাকা যার ২৭ শতাংশ বাংলাদেশ সরকার এবং বাকি অংশ ভিজিএফ হিসেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করবে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, নকশা বদল, অর্থ সংস্থানের জটিলতায় ৪ বার সময় বৃদ্ধির ফলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকায়। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহরের ৩০-৪০ শতাংশ যানজট কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জ্বালানি সাশ্রয় হবে, কমবে পরিবহন খরচও।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।