সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মার্কিন পর্যবেক্ষক দলের পাঁচ পরামর্শ
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:৫৬
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি আছে কি না, সেটি যাচাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে সফর করেছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্থবহ সংলাপে বসার তাগিদ দিয়েছে সাত সদস্যের প্রতিনিধিদলটি। ১০ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থান করেন তারা।
প্রথমেই তারা বলেছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ করতে হবে। এছাড়া তাদের দেওয়া পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, নির্বাচনের সময় মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। অহিংসার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং রাজনৈতিক সহিংসতার অপরাধীদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়েছে। সকল নাগরিকের ভিন্নমতকেও সম্মান জানাতে বলা হয়েছে তাদের পর্যবেক্ষণে।
সবশেষে, সব দলকে অর্থবহ এবং সমান রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে বলা হয়েছে, যেন তা স্বাধীন নির্বাচন পরিচালনাকে শক্তিশালী করে। দেশের নাগরিকেরা যেন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেওয়া হয় তাদের পক্ষ থেকে।
সফরকালে পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশি দূতাবাস ও বিভিন্ন হাইকমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
রোববার ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) যৌথ বিবৃতিতে এই পাঁচ সুপারিশের কথা তুলে ধরেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচনের জন্য বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যার মধ্যে আপসহীন রাজনীতি, একপেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, কঠোর রাজনৈতিক বক্তব্য, রাজনৈতিক সহিংসতা, অনিশ্চয়তা ও ভয়ের ব্যাপক পরিবেশ, নাগরিকদের অবস্থান, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং নাগরিকদের মধ্যে আস্থার ঘাটতি রয়েছে।
রাজনৈতিক নেতা এবং অন্য অংশীজন, নারী, তরুণ এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীর মধ্যেও রাজনৈতিক অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। বাংলাদেশ একটি নির্বাচনের সন্ধিক্ষণে রয়েছে এবং আসন্ন নির্বাচন গণতান্ত্রিক, অংশগ্রহণমূলক এবং প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি দেশের অঙ্গীকারের একটি পরীক্ষা।
নির্বাচন নিয়ে মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষকদের ৫ পরামর্শ হলো-
১. সহনশীল বক্তব্য ও নির্বাচনী ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ করতে হবে। ২. নির্বাচনের সময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। ৩. অহিংস কর্মকাণ্ডে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে এবং রাজনৈতিক সহিংসতার অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে। ৪. সব দলকে অর্থবহ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং ৫. নাগরিকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে।
আইআরই ও এনডিআই আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি চূড়ান্ত পরীক্ষা বলে জানায়। বলেন, প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে পারে এমন বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও অহিংস নির্বাচনের দিকে অগ্রগতির জন্য একটি রোডম্যাপ হিসেবে ৫টি পরামর্শ করেছে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।