বিএনপি ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি-লুটপাট হয়
৩ মিনিটে বঙ্গবন্ধু টানেল পার হলেন প্রধানমন্ত্রী, দিলেন টোল
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৩৯
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যখন দেশের উন্নয়ন করি, ওই বিএনপি-জামায়াত সবকিছু ধ্বংস করা শুরু করে। আমার বাবাকে (বঙ্গবন্ধু) ওই জিয়াই (জিয়াউর রহমান) হত্যা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে মানুষ একবেলা নুনভাত খেতে পারত না। আজকে আমরা দারিদ্র্য মোকাবেলা করেছি। আজকে আমরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের মানুষের জন্য গৃহের ব্যবস্থা করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের এই উন্নয়ন একমাত্র সম্ভব হয়েছে কারণ নৌকা মার্কায় (প্রতীক) আপনারা ভোট দিয়েছেন। যখনই নৌকা ক্ষমতায় এসেছে, তখনই দেশের উন্নয়ন হয়েছে।
তিনি বলেন, (চট্টগ্রামের) সবচেয়ে বড় সমস্যা জলাবদ্ধতা। এ জন্য (জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য) আমরা কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আপনাদেরকে চাল-ডাল-তেল দিচ্ছি বিনামূল্যে। দরিদ্র ও নিম্নবিত্তদের জন্যও আমরা ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির কাজই হচ্ছে খুন করা। খালেদা জিয়া এতিমদের টাকা না দিয়ে সেই টাকা আত্মসাৎ করেছে। তারই ছেলে বিভিন্ন মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ আরও অনেক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল। আজকে তারা সরকার পতনের জন্য নানা কথা বলে, নানা কর্মসূচি দেয়। কিন্তু খালেদা জিয়া ভোট চোর। আর সেই বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছে।
এর আগে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম যোগাযোগের সুড়ঙ্গ পথ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। শনিবার বেলা পৌনে ১২টায় চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে টানেলের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে টোল দিয়ে গাড়িতে করে টানেল পার হন সরকারপ্রধান।
এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাগর উপকূল ঘিরে শিল্পের নতুন দুয়ার খুলে গেল। রোববার সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে এই টানেল। দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম সুড়ঙ্গপথ এই টানেল চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করেছে।
কর্ণফুলীর টানেল শুধু চট্টগ্রাম শহরের দুই প্রান্তকে যুক্ত করবে না, হবে শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের যোগসূত্র। মাটির প্রায় ১৪০ ফুট গভীরে নির্মিত ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টানেলটি গাড়িতে পাড়ি দিতে সময় লাগবে তিন থেকে সাড়ে তিন মিনিট। টানেলে দুটি টিউব রয়েছে। এই টিউবগুলো কর্ণফুলী নদীর তলদেশ থেকে ১০৫ ফুট গভীরে নির্মাণ করা হয়েছে। গাড়ির জট যাতে না হয়, সে জন্য রয়েছে ২০টি টোল বুথ।
কর্ণফুলী নদীতে বিভক্ত চট্টগ্রাম শহরকে সাংহাইয়ের মতো ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ হিসেবে গড়তে টানেল নির্মাণের পরিকল্পনা করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর টানেল নির্মাণে প্রকল্পটি তাঁর সরকারের অনুমোদন পায়। পরের বছরের ১৪ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
সাত বছর পর বাস্তবে রূপ নিয়েছে টানেল। স্বাধীনতার ৫২ বছরে টানেলযুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। আনন্দের এই ক্ষণ উদযাপনে বর্ণিল সাজে সেজেছে কর্ণফুলীর দুই তীর।
সেতু কর্তৃপক্ষের নির্মাণ করা টানেলে গাড়ি চলাচলের কারণে শুধু দূরত্বই কমবে না, বাঁচবে সময় ও খরচ। কক্সবাজারের সঙ্গে চট্টগ্রামের দূরত্ব কমবে ৪০ কিলোমিটার। মহেশখালীতে চলমান ৭২টি প্রকল্পের সুফল সারাদেশ পাবে আরও কম সময়ে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।