শ্রমিকদের আটকে রেখে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন তমিজী হক
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৮:২৫
রাজধানীর গুলশানে হক গ্রুপের চেয়ারম্যান আদম তমিজি হকের বাসায় অভিযানে যাওয়া র্যাব কর্মকর্তাদের নানাভাবে বিভ্রান্ত ও আত্মহত্যার হুমকি দিচ্ছে। র্যাব বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে তাকে গ্রেপ্তার করতে চায় বাহিনীটি। এজন্যই সময় নেয়া হচ্ছে।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘আদম তমিজী হকের নামে অভিযোগ রয়েছে এবং মামলা রয়েছে। সার্চ ওয়ারেন্ট রয়েছেও। তার বাসায় একজন ইউকে নাগরিক ছিলেন এবং তার চতুর্থ স্ত্রী ছিলেন। সব আইন মেনেই আমরা অভিযানে যাই। কিন্তু একপর্যায়ে তিনি ছুরি নিয়ে সুইসাইড করার হুমকি দেন, জানালার গ্লাস ভেঙে ফেলেন, এক পা বাইরে দিয়ে লাফ দেয়ার হুমকি দেন। এমনকি তার স্ত্রীকেও বাসার ওপর থেকে ফেলে দেয়ার হুমকি দেন।’
‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তাকে তখন গ্রেফতার করা হয়নি, কিন্তু আমাদের অভিযান চলমান আছে। পরিস্থিতি অনুকূলে এলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে আমরা তাকে গ্রেফতার করতে চাই। তাই তাকে গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেছেন- এমন খবরে তার বাসায় অভিযান চালানো হয়।’
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি একেকবার একেক স্টেটমেন্ট দিচ্ছিলেন। এর আগে তিনি তার ফ্যাক্টরির সব শ্রমিকদের কাভার্ডভ্যানে ডেকে এনে আটকে রেখেছিলেন। এরপর বাসার মেইন গেট ঝালাই করে দিয়েছেন, যাতে কেউ বের হতে না পারে। এমনকি শ্রমিকরা বের হতে গেলে তাদেরকেও আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি। পরে আমরা তার বাসায় গেলে শ্রমিকরা বের হয়ে যান।’
অভিযানের সময় এক ব্রিটিশ নাগরিক ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করেন। আমরা শুনেছি এরইমধ্যে তার বন্ধু পরিচয় দেয়া সেই ব্রিটিশ নাগরিক চলে গেছেন। আমরা স্বাভাবিক ও সুস্থভাবে তাকে আইনের আওতায় আনতে চাই।’
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে গুলশান-২ এর ১১১ নম্বর রোডে তার ৮ নম্বর বাড়ি ঘিরে রেখে অভিযান চালায় র্যাব। তবে র্যাব সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করতে গেলে আত্মহত্যার হুমকি দেন আদম তমিজী। পরে র্যাব সদস্যরা তাকে গ্রেফতার না করে অভিযান শেষ করেন।
এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর ফেসবুক লাইভে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পুড়িয়ে আলোচনায় আসেন আদম তমিজী হক। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে নানা আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেন। এরপর ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য পদ হারান তিনি।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।