শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তারা কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা রাষ্ট্রীয় সালাম দেন।

বিউগলে বাজানো হয় করুণ সূর। কুয়াশা মোড়ানো শীতের সকালে পিনপতন নীরবতায় করুণ সেই সুরে ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়, তৈরি করে শোকের আবেশ।

এরপর দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দ্বিতীয় বার শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ আঙিনায় উপস্থিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তানদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী।

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তানদের পক্ষ থেকেও শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকা ছেড়ে গেলে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ সময় শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের ঢল নামে।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এদেশের বরেণ্য গুণীজনদের হত্যা করা হয়। এদেশ যাতে কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সমৃদ্ধির আলোয় উদ্ভাসিত হতে না পারে, এদেশকে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়াই ছিল রাজাকার-আলবদর বাহিনীর লক্ষ্য।

এ হত্যাকাণ্ড ছিল বিশ্বের ইতিহাসে জঘন্যতম বর্বরতার এক উদাহরণ। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর-রায়েবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রাখে।

১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর পরই নিকট-আত্মীয়রা মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে স্বজনের লাশ খুঁজে পায়। বুদ্ধিজীবীদের নিথর দেহজুড়েই ছিল আঘাতের চিহ্ন। তাদের চোখ, হাত-পা ছিল বাঁধা, কারও কারও শরীরে একাধিক গুলি এবং কাউকে কাউকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যাও করা হয়েছিল। লাশের ক্ষতচিহ্নের কারণে অনেকেই তাদের প্রিয়জনের লাশ শনাক্তও করতে পারেননি।