ভারত এদেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী চুক্তি করছে - নুরুল হক নুর
সুজন হাসান | প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:৪০
ভারতের সাথে দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী সকল অসম চুক্তি বাতিল এবং দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। আজ (শুক্রবার) বিকাল ৪ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে পল্টন মোড়, বিজয়নগর, নাইটিংগেল মোড় ঘুরে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির মোড় এসে শেষ হয়। এসময় নেতাকর্মীরা ভারতের সাথে অসম চুক্তির বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, সরকার ভারতের সমর্থন নিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে ভারতের সাথে একের পর এক দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী চুক্তি করছে। এই চুক্তির মাধ্যমে তারা দেশকে সিকিম,হায়দাবাদের মতো ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য বানাতে চায়। মোদির সাথে সাক্ষাৎ করতে পেরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিনি গর্বিত। মোদি তো তার সাথে দেখা করতে আসেনি। প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাচ্ছেন, তাই ভারত যেন অখুশি না হয় তাই ভারতকে খুশি করতে তিনি মোদির সাথে দেখা করতে গেছেন।
শেখ হাসিনা লেন্দুপ দর্জির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এই সরকারের কাছে দেশ ও জনগণ নিরাপদ নয়। আমরা বেঁচে থাকতে বাংলাদেশের বুক চিড়ে ভারতীয় রেল চলতে দেবো না। প্রয়োজনে ৭১ এর মত দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুদ্ধ করবো,জীবন দেবো। দেশবাসীসহ সকলকে বলবো আপনারা এই চুক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন, রাস্তায় নামুন।
নুরুল হক আরও বলেন, দেশে দুর্নীতি-লুটপাটের মহামারী চলছে। এমনকি সংসদেও দুর্নীতি নিয়ে কথা হচ্ছে। এমপিরা আমলাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে বলছেন, অথচ তারা নিজেরাও দুর্নীতিবাজ, লুটেরা। পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান ডিআইজি রফিকুল ইসলাম, জামিলসহ পুলিশের ৬/৭ জন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা দুর্নীতির তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এরকম আরও এক/দেড়শ দুর্নীতিবাজ অফিসার আছে। এক/দেড়শ দুর্নীতিবাজদের দায় পুরো বাহিনীর নয়। তাই পুলিশ সদস্যদের বলবো নিজেদের মধ্যে দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করুন।
গণঅধিকার পরিষদ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগেই রাজপথে স্লোগান নিয়েছিলো দিল্লি না ঢাকা। পরবর্তীতে আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন ও আধিপত্য - আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুতে আমাদের হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে, মোদির আগমন বিরোধী আন্দোলনে ৬৪ জন নেতাকর্মীদের গ্রেফতার হতে হয় এবং অসংখ্য নেতৃবৃন্দকে নির্যাতন নিপীড়ন করেছে সরকার। তবুও এই লড়াই আমরা থামায় নি।
আমাদের গণতন্ত্রের এখন প্রধান শত্রু এখন ভারত। সুতরাং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভারতের আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে এই দেশের ছাত্র তরুণদের জেগে উঠতে হবে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশের বুকের ওপর দিয়ে কোন ভারতীয় ট্রেন চলবে না। অনতিবিলম্ব এই অসম চুক্তি বাতিল না করলে প্রয়োজনে জনগণ গণভবন অভিমূখে কর্মসূচি দিবে। আমর দেখতে পাচ্ছি পুলিশ ও সেনাবাহিনী সাবেক প্রধানরা দুর্নীতিবাজ, সাবেক ডিমএমপি কমিশনার দুর্নীতিবাজ।
আজকাল দুর্নীতিবাজরা সন্তানকে স্বীকার করেনা। আবার সন্তানরা বাবাকে স্বীকার করেনা। এই হলো দুর্নীতির ভয়াবহতা। এই দুর্নীতির আবার আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় দুদক। ইতোমধ্যে মতিউরকে ক্লিন সার্টিফিকেট দিয়েছে দুদক। অথচ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেল খাটতে হয়েছে, এখন গৃহে অন্তরীণ রয়েছে দুদকের মিথ্যা মামলায়। এই দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভারতীয় তাবেদার সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের গণঅভ্যুত্থান গড়ে তুলতে হবে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।