শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ছাত্রলীগ নিয়ে কোটা সমন্বয়ক সারজিসের স্ট্যাটাস ঘিরে আলোড়ন

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০২৪, ১৫:১০

ছবি: সংগৃহীত

কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমের কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যার মধ্যে একটি ছবিতে দেখা গেছে, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের পাশে দাঁড়িয়ে কোনো এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন তিনি। এমন ছবি ছড়িয়ে পড়ার পর ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা নিয়ে বেশ আলোচনা সমালোচনা হচ্ছে। এ অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন সারজিস।

গত ২৬ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে সারজিস বলেছেন, যারা কিছু না জেনে কয়েকটা ছবি দেখে মনমতো অনেক কিছু বলে ফেলছেন, তাদের সাথে ক্ষমতাসীন দলের অন্ধ ভক্তদের কোনো পার্থক্য নেই। ক্ষমতায় আসলে সবাই একই রকম হবেন তাতে সন্দেহ নেই। বরং দলান্ধ না হয়ে বিবেকবুদ্ধি দিয়ে ব্যক্তিত্ব আর কাজ দিয়ে যাচাই করতে বলেন তিনি।

কিছু মানুষ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের সম্পৃক্ততা নিয়ে কথা বলছেন। সে বিষয়ে তিনি জানান, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারীতে ১ম বর্ষে থাকা অবস্থায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলে ওঠেন। রাজনৈতিক ছত্রছায়া ছাড়া হলে উঠার কোনো সুযোগ নেই। বর্তমানে ঢাবির হলে থাকতে হলে অন্তত ১ম, ২য়, ৩য় বর্ষে প্রত্যেককে ছাত্রলীগ করতে হবে। ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম, গেস্টরুম করা বাধ্যতামূলক। নাহলে হলে থাকতে পারবে না।

২০১৯ সালে ডাকসু ইলেকশনে সারজিস ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সর্বোচ্চ ভোট পান। ছাত্রদে কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা ছিল তারাই নির্বাচিত হয়েছিলো।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবি প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, একটা ছবি ২০১৯ সালে হল ছাত্রলীগের কোনো প্রোগ্রামের। তখনকার সময় অনুযায়ী জুনিয়র হিসেবে শখ করে তোলা। অন্য ছবিটি ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের ম্যান অব দ্যা সিরিজ ট্রফি নেওয়ার সময় তোলা। ঢাবি-পঞ্চগড় এসোসিয়েশন আয়োজিত ওই প্রতিযোগিতায় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন অতিথি ছিলেন।

এরপর ২০২২ সালের এপ্রিলে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে সরে আসেন বলে জানান সারজিস আলম। অনেক কারণ থাকলেও প্রধান দুটি কারণ উল্লেখ করেন তিনি। সারজিস বলেন, তখন হল প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারির থেকে আমার মাধ্যমে জুনিয়দের জন্য যে নির্দেশ আসতো সেটা আমার কাছেই অযৌক্তিক, অন্যায় ও জুলুম মনে হতো। সে জায়গা থেকে নিজের বিবেকবোধকে প্রায়োরিটি দিয়ে আমি ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে সরে যাই।

দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি জানান, বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি সরকার ও ছাত্রলীগ নিয়ে সরকারবিরোধীদের চেয়ে কঠোরভাবে যৌক্তিক সমালোচনা করার চেষ্টা করেন। এজন্য ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট সেক্রেটারি তাকে অনেকবার রুমে এবং গেস্টরুমে ডেকে এসব লেখালেখির জন্য সতর্ক করে।

সবশেষে হল ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার আগে তাকে লেখালিখি অথবা ছাত্রলীগ যেকোনো একটি অপশন দেওয়া হয়। তিনি নির্দ্বিধায় লেখালিখিকেই বেছে নেন। সারজিস লিখেন, নিজের বিবেকের কাছে সত্য আর স্বচ্ছ থাকার চেয়ে আত্মিক প্রশান্তির কিছু হতে পারে না। ফলে ছাত্রলীগের কোনো কমিটিতে তার কোনো পোস্ট নেই বলে জানান কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।

 

 

 

 

 

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top