ছাত্রনেতা থেকে উপদেষ্টা: আসিফ-মাহফুজের পদত্যাগ কেন?

উপদেষ্টা পদ ছাড়লেন আসিফ-মাহফুজ, মাঠে নতুন বিতর্ক!

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:৩০

সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পাওয়া দুই তরুণ ছাত্রনেতা— আসিফ মাহমুদ এবং মাহফুজ আলম। বুধবার, অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর, এই দুই নেতা তাদের পদত্যাগপত্র প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন। কিন্তু তাদের বিদায়ের রেশ কাটতে না কাটতেই তাদের বিরুদ্ধে উঠলো গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ এবং তদন্তের দাবি।

কুমিল্লার ছেলে আসিফ মাহমুদ, যিনি স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা ছিলেন, শুরু থেকেই নানা বিতর্কের জন্ম দেন। তারই আওতাধীন প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে তার বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স পাওয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। বিমান বন্দরে বৈধ অস্ত্রের ম্যাগাজিন নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়, এমনকি নিজ জেলা কুমিল্লায় উন্নয়ন প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি ৪৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া নিয়ে তিনি সমালোচিত হন। সব বিতর্কের মাঝেই ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনে ভোটার হওয়ার আবেদন করে তিনি নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা দেন।

অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাহফুজ আলম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক ছিলেন। প্রথমে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেলেও, পরে তিনি তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রধান উপদেষ্টা তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের মঙ্গল কামনা করেন এবং বলেন, সরকারে থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা ভবিষ্যৎ জীবনে কাজে লাগাতে হবে।

কিন্তু পদত্যাগের একদিন পরই, অর্থাৎ আজ বৃহস্পতিবার ১১ ডিসেম্বর, যুব অধিকার পরিষদ তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তদন্তের দাবি জানালো। রাজধানীর পল্টনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মনজুর মোরশেদ মামুন হুঁশিয়ারি দেন— দুর্নীতির অভিযোগ আমলে না নিয়ে এই দুজনকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিলে দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদক ঘেরাও করা হবে।

যুব অধিকার পরিষদ অভিযোগ করে, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পরিবারের সদস্যরা ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে সম্পদ গড়ে তুলেছেন। একই সঙ্গে মাহফুজ আলমের পিএস-এপিএস এর বিরুদ্ধেও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। বক্তারা অবিলম্বে এসব অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্ত করে সত্য উদঘাটনের জন্য দুদকের প্রতি আহ্বান জানান। এখন দেখার বিষয়, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আসা এই অন্তর্বর্তী সরকার এই দুই সাবেক ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top