পর্তুগালে তীব্র তাপপ্রবাহে হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক | প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০২২, ০৬:২০

পর্তুগালে তীব্র তাপপ্রবাহে হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু

ভয়াবহ তাপপ্রবাহের কবলে পড়ে বিপর্যস্ত পর্তুগাল। চলমান এই তাপপ্রবাহের কারণে গত দুই সপ্তাহে ইউরোপের এই দেশটিতে এক হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পর্তুগালের স্বাস্থ্য প্রধান সতর্ক করে বলেছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আমাদেরকে প্রস্তুত হতে হবে।

বুধবার (২০ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। অবশ্য, শুধু পর্তুগালেই নয়, গোটা ইউরোপজুড়েই চলছে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ক্রোয়েশিয়ায়ও ভয়াবহ তাপপ্রবাহ চলছে।

পর্তুগালের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ ডিরেক্টরেট জেনারেল অব হেলথ (ডিজিএস)-এর প্রধান গ্রাসা ফ্রেইটাস রয়টার্সকে বলেছেন, ‘পর্তুগাল বিশ্বের এমন অঞ্চলগুলোর একটি যা প্রচণ্ড গরমে (আরও) প্রভাবিত হতে পারে। আর তাই উচ্চ তাপমাত্রার সময়ের জন্য আমাদের আরও বেশি করে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

রয়টার্স বলছে, খরা-পীড়িত পর্তুগালে গত সপ্তাহে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে। যদিও চলমান এই তাপপ্রবাহ গত কয়েকদিনে কিছুটা কমেছে, তারপরও বছরের এই সময়ের বিবেচনায় তাপমাত্রা এখনও স্বাভাবিক মাত্রার ওপরেই রয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ফ্রেইটাস।

এদিকে ভয়াবহ তাপপ্রবাহের কারণে পর্তুগালে গত ৭ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত ২৩৮ জনের মৃত্যুর কথা আগেই জানিয়েছিল ডিজিএস। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের প্রধান গ্রাসা ফ্রেইটাস বলছেন, গত ১৮ জুলাই পর্যন্ত পর্তুগালে তাপপ্রবাহে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৩ জনে।

সম্প্রতি পর্তুগালে বেশ কয়েকটি দাবানলের সৃষ্টি হয়েছে। উচ্চ তাপমাত্রা, চলমান খরা এবং নিম্নমানের বন ব্যবস্থাপনাকে পর্তুগালজুড়ে দাবানলের জন্য দায়ী করা হয়েছে। অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা স্পেনসহ অন্যান্য দক্ষিণ ইউরোপীয় দেশগুলোতেও দাবানল মোকাবিলায় লড়াই করছে।

পর্তুগালের লিসবন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান অনুষদের গবেষক কার্লোস আন্টুনেস একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি রয়েছে বয়স্ক মানুষরা।

তিনি বলছেন, তাপপ্রবাহের কারণে ভবিষ্যতে মৃত্যুর সংখ্যা অন্যান্য বিষয়গুলো ছাড়াও লোকেরা নিজেদের রক্ষা করার জন্য ঠিক কী ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সেটির ওপরও নির্ভর করবে। এছাড়া কেয়ার হোমগুলো (বৃদ্ধাশ্রম) কীভাবে তাদের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে এবং অবকাঠামোগুলোকে গড়ে তুলছে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ।

আন্টুনেস আরও বলছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এটি প্রত্যাশিত যে, (তাপপ্রবাহের কারণে) মৃত্যুহারের এই বৃদ্ধি আরও তীব্র হবে। আর তাই জনস্বাস্থ্য স্তরে তাপপ্রবাহের প্রভাব কমানোর জন্য আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে।’

অবশ্য, শুধু পর্তুগালেই নয়, গোটা ইউরোপই ভয়াবহ তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে। ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ক্রোয়েশিয়ায়ও ভয়াবহ তাপপ্রবাহ চলছে। যুক্তরাজ্যে গত সোমবার গরমের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা হয়েছে।

সূত্র : রয়টার্স ও ডয়চে ভেলে

এনএফ৭১/আরআর/২০২২




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top