কুপিয়ে জ্যান্ত কবর দেন স্বামী, আকস্মিকভাবে বেঁচে গেলেন ৪২ বছরের নারী

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৩ অক্টোবর ২০২২, ০৯:২৭

মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরা নারী

ইয়াং সুক অ্যান ওয়াশিংটনের বাসিন্দা। স্বামী চে কিয়ংয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় আগেই। অভিযোগ, ইয়াংয়ের প্রতি তার স্বামীর আক্রোশ ছিল। আমেরিকাবাসী এই কোরিয়ান দম্পতির কাহিনি ওয়াশিংটনে রীতিমতো সাড়া ফেলেছে। কীভাবে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার পরও বেঁচে ফিরলেন ইয়াং। তা নিয়ে চলছে শোরগোল।

১৬ অক্টোবর (রোববার) ওয়াশিংটনের বাড়ি থেকে ইয়াংকে অপহরণ করা হয়। অভিযোগ, সাবেক স্বামী কিয়ং ফাঁকা বাড়িতে হানা দেন আচমকা। তারপর ইয়াংকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যান।

পুলিশ জানিয়েছে, বিচ্ছেদের পর থেকে ওয়াশিংটনের বাড়িতে সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে থাকতেন ইয়াং। তবে গত রোববার তারা কেউ বাড়িতে ছিল না। সেই সুযোগকে কাজে লাগান তার সাবেক স্বামী।

ইয়াং জানিয়েছেন, তার স্বামী তাকে খুন করার চেষ্টা করছিলেন। বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় একটি জঙ্গলে। সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের একাধিক অংশে কোপ মারা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় এরপর তাকে ওই জঙ্গলেই পুঁতে দেওয়ার তোড়জোড় করেন চে। মাটি খুঁড়ে জীবন্ত অবস্থাতেই সাবেক স্ত্রীকে গর্তে ফেলে দেন। এরপর তার শরীরের ওপর চাপা দেন মাটি।

চে ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলেও মাটির নীচে তখনও তার স্ত্রীর দেহে প্রাণ ছিল। জ্ঞানও হারাননি ইয়াং। নিজেই নিজেকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করেন।

ইয়াং আরও জানিয়েছেন, মাটির নীচে ক্রমাগত নাক নাড়াচাড়া করছিলেন তিনি। সমস্ত শক্তি দিয়ে নিশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নাকের মাধ্যমেই মাটি একটু একটু করে সরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বেশ কিছু ক্ষণের চেষ্টায় মাটি ভেদ করে মাথা তুলতে পারেন ইয়াং। কোনো রকমে উঠে আসেন ওপরে। মাঝরাতে হাজির হন এক প্রতিবেশীর বাড়ি।

ঘড়ির কাঁটায় তখন রাত ১২ টা ৫২ মিনিট। ইয়াংয়ের কড়া নাড়ার শব্দ শুনে দরজা খোলেন তার প্রতিবেশী। তাকে সবটা জানানোর পর রাতেই ডাকা হয় পুলিশ। ইয়াং যখন প্রতিবেশীর বাড়ি পৌঁছান, তখন তার শরীরের বিভিন্ন অংশে মোটা সেলোটেপ লাগানো ছিল। সেলোটেপ দিয়েই তাকে বাঁধার চেষ্টা করেছিলেন চে।

জানা যায়, সাংসারিক ঝামেলার কারণেই চে এবং ইয়াংয়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয় চে-এর বিরুদ্ধে ফতোয়াও জারি করেছিল আদালত।

ইয়াংকে যখন তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিখোঁজ ব্যক্তির সতর্কতামূলক সঙ্কেত ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে তখন থেকেই। ইয়াংয়ের বাড়িতে গিয়ে তারা ধস্তাধস্তির চিহ্ন পায়। বাড়ির গ্যারেজের দরজা খোলা দেখতে পায় পুলিশ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু ব্যবহৃত সেলোটেপ।

প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে চিকিৎসার জন্য ইয়াংকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি এখন সুস্থ আছেন।

ইয়াংয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ১৭ অক্টোবর গ্রেপ্তার হন চে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে জঙ্গলের কাছে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছিলেন। তারাই পুলিশে খবর দেন। বর্তমানে জেলে রাখা হয়েছে অভিযুক্তকে। তার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top