মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ল ৬ মাস

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮:৪৬

ফাইল ছবি

মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আবারও ছয় মাস বাড়িয়েছে দেশটির সামরিক সরকার। এর ফলে অভ্যুত্থানের পর জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের দেওয়া নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আরও বিলম্ব হতে পারে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দেশটির জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা পরিষদ এ সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিলম্বে হলেও নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জান্তা সরকার। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এমআরটিভি তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এ ব্যাপারে জানিয়েছে, অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন আয়োজন করতে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার। সাধারণ নির্বাচন সফলভাবে আয়োজন করতে এখনও অনেক কাজ বাকি আছে।

মিয়ানমার জান্তা এক বিবৃতিতে বলেছে, মিয়ানমারের জরুরি অবস্থার মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়েছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ইউ মিন্ট সোয়ে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করার জন্য জরুরি অবস্থা জারি রাখতে হবে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিরোধিতার মোকাবিলার অজুহাত দিয়ে বিভিন্ন সময় জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে জান্তা সরকার। বিলম্ব হলেও নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জান্তা সরকার বলেছে, নির্বাচন হবে।

অং সান সুচির বেসামরিক সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত হয়ে আছে দেশটি। চলতি বছর সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার। অবশ্য সমালোচকদের ধারণা, পুতুল নেতা সামনে বসিয়ে পেছন থেকে কলকাঠি নাড়বেন সামরিক জেনারেলরা।

নির্বাচনের নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে, নিজেদের পরিকল্পনামাফিক সামনে আগানোর চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী। যদিও দেশের বিভিন্ন ফ্রন্টে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে সামরিক সরকার।

চার বছরের যুদ্ধে মিয়ানমারে প্রায় ত্রিশ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছেন বলে জাতিসংঘের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সংস্থাটি বলছে, মিয়ানমারব্যাপী মারাত্মক খাদ্য সংকট ছড়িয়ে পড়েছে এবং এক তৃতীয়াংশ জনগণের ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। এই অবস্থায় যে কোনও মূল্যে যুদ্ধ জেতার মানসিকতা ত্যাগ করে সব পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসায় আহ্বান জানিয়েছেন মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এমআরটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুদ্ধে ছারখার দেশে প্রায় পঙ্গু অর্থনীতি নিয়েই দেশে নির্বাচন আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর জান্তা সরকার। অথচ মিয়ানমারের ডজনখানেক রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে আর বাকিরা সেনা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনে অংশ নিতে আপত্তি জানিয়েছে। জান্তা বিরোধীরা নির্বাচন বানচাল করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে, ভোটে যেই জিতুক, তাকে যেন স্বীকৃতি দেওয়া না হয়, কেননা তাদের পেছনে কোনও জনসমর্থন থাকবে না।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top