মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেলেন সাবেক আইনপ্রণেতা তুলসি গ্যাবার্ড। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে এই পদের জন্য নির্বাচিত হন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তার এই মনোয়ননকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে বিতর্কিত মনোনয়ন হিসেবেই দেখা হয়। বিবিসি, রয়টার্সসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সিনেটে ৫২-৪৮ ভোটে তুলসী গ্যাবার্ডের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়। তিনি দেশটির ১৮টি গোয়েন্দা সংস্থার কাজ দেখভাল করবেন। আবার গোয়েন্দা বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরামর্শ দেবেন তুলসী গ্যাবার্ড।
তুলসীর পক্ষে পড়া ৫২ ভোটের সব কটিই রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের। তবে মিচ ম্যাককনেল নামের এক রিপাবলিকান সদস্য এ মনোনয়নের বিরোধিতা করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুলসী গ্যাবার্ডের এই বিজয়কে ডোনাল্ড ট্রাম্পেরই একটি বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনিক নানা পদে তার মনোনীত ব্যক্তিদের দ্রুত সিনেটের অনুমোদন নিশ্চিত করতে চাইছিলেন।
জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের পদটি সৃষ্টি হয় ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের টুইন টাওয়ারে হামলার পর। মার্কিন কংগ্রেস এই পদ সৃষ্টি করে। মার্কিন সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা প্রধানের পদ এটি।
তুলসীর এই মনোনয়নের পর সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রযুক্তি কর্মসূচির পরিচালক এমিলি হার্ডিং বলেছেন, ‘জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক নির্বাচন খুব বড় বিষয়।’ তিনি বলেন, জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের গোপন সব নথি পাওয়ার অধিকার আছে। এর পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রধান গোয়েন্দা পরামর্শকও তিনি।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বর মাসে নির্বাচিত হওয়ার পর জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হিসেবে গ্যাবার্ডের নাম ঘোষণা করেন ট্রাম্প। তার এই ঘোষণা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। অনেকেই এই বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে এই মনোনয়নের ফলে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে রাজনৈতিকীরণ ঘটতে পারে। তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
তুলসী গ্যাবার্ডের ব্যাপারে যেসব সমালোচনা ছিল, এর মধ্যে আছে, তিনি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের সমর্থক। আবার তিনি সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের প্রতিও সহানুভূতিশীল। ২০১৭ সালে তিনি বাশারের সঙ্গে দেখাও করেছিলেন।
বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুলসীর সঙ্গে ভারতের ক্ষমতাসীন পার্টি বিজেপির ‘নৈকট্য’ আছে। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে বিয়ে করেন তুলসী গ্যাবার্ড। সেই সময় তার বিয়ে নিয়ে ভারতে বিস্তর আলোচনাও হয়েছিল। কারণ, বৈদিক রীতি অনুযায়ী হাওয়াইয়ে সিনেমাটোগ্রাফার আব্রাহাম উইলিয়ামসকে বিয়ে করেছিলেন গ্যাবার্ড। এদিকে এরই মধ্যে নরেন্দ্র মোদি দুদিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছেছেন। তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে তুলসী গ্যাবার্ডের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।