র্যাব কার্যালয়ে কর্মকর্তার গুলিবিদ্ধ লাশ, পড়ে ছিল অস্ত্র ও চিরকুট
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৯ মে ২০২৫, ১৭:৪৮

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও র্যাব-৭ ক্যাম্প থেকে পলাশ সাহা (৩৭) নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থলে পড়ে ছিল একটি চিরকুট। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের তৃতীয় তলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম পলাশ সাহা। তিনি ৩৭তম বিসিএসের পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা। পলাশ সাহা র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তার কক্ষ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং চিরকুটও পাওয়া গেছে। চিরকুটে মৃত্যুর জন্য নিজেকে ছাড়া আর কেউ দায়ী করেননি পলাশ সাহা; বিসিএস ৩৭ ব্যাচের পলাশ সাহার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) এ আর এম মোজাফফর হোসেন জানান, বহদ্দারহাট ক্যাম্পে কর্মরত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পলাশ সাহা অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অস্ত্র ইস্যু করে তিনি নিজের অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পর শব্দ শুনে কর্তব্যরত অন্য র্যাব সদস্যরা তার কক্ষে যান এবং তাকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পান। সেই সময় তার নিজ ইস্যুকৃত পিস্তল নিচে পড়ে থাকতে দেখা যায়। টেবিলে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে পলাশ সাহাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার কানের পাশে একটি গর্তের মতো চিহ্ন রয়েছে, যেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে কিসের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে।’
এদিকে র্যাব-৭ এর হোয়াটসআপ গ্রুপে এক বার্তায় বলা হয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পলাশ সাহা অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় অস্ত্র ইস্যু করে নিজের অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন।
“কিছু সময় পর গুলির শব্দ শুনে দায়িত্বরত অন্যান্য র্যাব সদস্যরা সেখানে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সুপার পলাশ সাহাকে পড়ে থাকতে দেখেন।"
এছাড়া সকালে ইস্যু করা পিস্তলটি সেখানে পড়ে ছিল এবং টেবিলে একটি ‘সুসাইড নোট’ পেয়েছেন র্যাব সদস্যরা।
এক পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমতে বলেছেন, পলাশ সাহার কক্ষ থেকে উদ্ধার করা চিরকুটের লেখা অনুযায়ী তিনি ‘পারিবারিক’ কারণে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তার কক্ষ থেকে উদ্ধার করা চিরকুঠে লেখা আছে, “আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী, কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না।”
ওই চিরকুটে নিজের মাকে দেখে রাখার কথাও লিখে গেছেন ওই র্যব কর্মকর্তা।
তিনি লিখেছেন, “বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের উপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কো-অর্ডিনেট করে।”
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।