ভাসছে ঘর, ভাসছে জীবন—বাঁচার লড়াইয়ে ফেনীর বানভাসি মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২৫, ১৬:৪৮

টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে ফেনীর বহু গ্রাম। নদীর পানি হয়তো কিছুটা কমেছে কিন্তু বিপদ কমেনি। কারণ—ভাঙা বাঁধ দিয়ে এখনো ঢুকছে নতুন নতুন এলাকায় পানি।
ফুলগাজী উপজেলার দক্ষিণ আনন্দপুর। তনিমা সুলতানার ঘরে বুধবার রাতেই ঢুকে পড়ে পানি। ভেসে যায় ঘরের আসবাব, সবকিছু। গবাদিপশু নিয়ে এখন তিনি পরিবারসহ আশ্রয় নিয়েছেন পাশের দোতলা বাড়ির ছাদে।
সেই বাড়ির মালিক শাহজাহান মজুমদার। তার ছাদে এখন শুধু পরিবার নয়—আশ্রয় নিয়েছে আরও অন্তত ১০টি পরিবার। এমনই অবস্থা চলছে ফেনীর পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও সদর উপজেলার বহু গ্রামে। মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে শতাধিক গ্রাম এখন পানির নিচে।
জেলার হিসাব বলছে: বন্যাক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৭ হাজার মানুষ। বাকি সবাই বাড়ির ছাদে, আত্মীয়ের ঘরে, অথবা খোলা আকাশের নিচে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছয়টি উপজেলায় ত্রাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা। তবে চাহিদার তুলনায় সেটা খুবই অল্প।
আবহাওয়ার খবর? গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টি চলবে শুক্রবারও। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে কিন্তু ভাঙা বাঁধ দিয়ে এখনো পানি ঢুকছে গ্রামে গ্রামে। পানি কমলেই বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হবে।
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানালেন: আমরা কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজর রাখছি। আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তবতা হচ্ছে—হাজার হাজার মানুষ এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন পার করছেন।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।