মিষ্টি ছাড়লেও কেন ডায়াবেটিস বাড়ে?

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২৪, ১৬:৪২

ছবি: সংগৃহীত

শরীরের নিঃশব্দ ঘাতক ডায়াবেটিস। এরোগে আক্রান্তের শরীরে নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে। অনেকের ধারণা, শুধু মিষ্টি খেলেই রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু মিষ্টি নয়, ব্লাড সুগার বেড়ে যাওয়ার আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে।

ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে আমরা অনেকেই ভেঙ্গে পড়ি, হতাশ হয়ে যাই। আমরা ভেবে থাকি যে, আমার জীবনটা বুঝি স্তব্ধ হয়ে গেল, কিংবা জীবনটাই থেমে গেল!  

ডায়াবেটিস রোগীদের সব থেকে বড় সমস্যা কী খাবেন আর কী খাবেন না। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হলে শুধু খাওয়াদাওয়ায় নয়, নজর দিতে হবে জীবনযাপনের আরো কয়েকটি বিষয়ের উপর।

১) দিনের বেশির ভাগ সময়েই বসে, শুয়ে কাটান? চিকিৎসকেরা বলছেন, শারীরিক সক্রিয়তার অভাব কিন্তু টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই সম্ভব হলে রোজ অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করার চেষ্টা করুন। তার জন্য যে জিমে গিয়েই যে কসরত করতে হবে, এমন নয়। দিনের যেকোনো সময়ে হাঁটতে পারেন, সাইকেল চালাতে পারেন কিংবা যোগাসনও করতে পারেন।

২) কাজ থেকে ফিরে রোজ রাতে রান্না করতে মোটেই ভালো লাগে না। প্রায়ই অনলাইনে খাবার অর্ডার করেন। এই ধরনের খাবার কিন্তু রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে যাওয়ার জন্য অনেক অংশে দায়ী। ময়দা, সাদা চিনি, শুকনো ফল এবং গ্লুটেন-যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। তার বদলে এমন খাবার খেতে হবে, যার মধ্যে প্রাকৃতিক শর্করা বেশি।

৩) রাতের খাবার খেয়েই শুয়ে পড়ার অভ্যাস রয়েছে? তা হলে কিন্তু ডায়াবেটিস হানা দিতে পারে। চিকিৎসকেরা বলছেন, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখার স্বাভাবিক এবং সহজ একটি উপায় হল, রাতে তাড়াতাড়ি খাবার খেয়ে নেয়া। তাই রাত ৮টার মধ্যে নৈশভোজ সেরে নেয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা।

৪) যাদের রক্তে শর্করা একটু বাড়তির দিকে, তাদের জন্য ভাতঘুম একেবারেই নিষিদ্ধ। চিকিৎসকেরা বলছেন, এই অভ্যাস কিন্তু চুপিসারে রক্তে শর্করা বাড়িয়ে তোলে। এমনকি, রাতেও শোয়ার অন্তত পক্ষে ঘণ্টাদুয়েক আগে খাবার খেয়ে নিতে পারলে ভাল হয়।

৫) দীর্ঘ দিন ধরেই যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, ভারী খাবার খাওয়ার অন্তত আধঘণ্টা আগে ইনসুলিন ওষুধ বা ইঞ্জেকশন তাদের নিতেই হয়। এক দিন ভুলে গেলে বা ওষুধ বন্ধ রাখলেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

৬) শারীরিক বা মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। ঘুম না হলে হরমোনের ভারসাম্য ব্যাহত হতে পারে। এর ফলে ইনসুলিন প্রতিরোধের এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হয়। এ ছাড়া কম ঘুম হলে বেশি মিষ্টিযুক্ত খাবার খেতে ইচ্ছে হয়। এ প্রবণতা রক্তে সুগারের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।

৭) একজন ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে তার খাদ্যতালিকা এমনভাবে সাজাতে হবে যেন, তাঁর সারাদিনের খাবার তিন বেলা নয়, পাঁচ বারে ভাগ করে খেতে হবে।

সকালের নাস্তা সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে করতে হবে এবং এরপর সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে হাল্কা কিছু নাস্তা কিংবা ভিটামিন সি যুক্ত ফল খেতে হবে। দুপুরের খাবার সময় মত খেতে হবে, বিকালে হালকা একটু নাস্তা নিতে হবে এবং রাতের খাবারটা যতটা সম্ভব ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে শেষ করে নিতে হবে। সঙ্গে রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। 

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ মিনিট হাঁটতে হবে।

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top