পাতাল রেল নির্মাণকাজের উদ্বোধন ২৬ জানুয়ারি
রাজিউর রেহমান | প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী ২০২৩, ০৭:১৯
দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের লাইন-১-এর নির্মাণকাজ আগামী ২৬ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। লাইন-১ বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত। এটি দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল।
লাইন-১-এর প্রকল্প পরিচালক আবুল কাশেম ভূঁঞা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্বাচলে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের একটি খালি প্লটে লাইন-১ পাতাল রেলের শুভসূচনা করবেন। তিনি একটি ফলক উন্মোচন করবেন। এর মধ্য দিয়ে লাইন-১-এর ডিপোর কাজ শুরু হবে। তিনি আরও জানান, পিতলগঞ্জের ডিপো নির্মাণ এলাকায় জায়গার সংকুলান হবে না তাই এখানে করা হবে।
আরও পড়তে পারেন>>>পাকিস্তানে ২২ কোটি লোক অন্ধকারে নিমজ্জিত
লাইন-১ বিমানবন্দর রুট এবং পূর্বাচল রুটে বিভক্ত থাকবে। বিমানবন্দর অংশের রুটটি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে শুরু করে বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩, খিলক্ষেত, যমুনা ফিউচার পার্ক, নতুন বাজার, উত্তর বাড্ডা, বাড্ডা, হাতিরঝিল, রামপুরা, মালিবাগ, রাজারবাগ হয়ে কমলাপুর যাবে ।
সম্পূর্ণ আন্ডারগ্রাউন্ড প্রায় সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রুটে ১২টি স্টেশন থাকবে। যার মধ্যে নতুন বাজার স্টেশনে লাইন-৫ -এর সঙ্গে এই রুটের আন্তসংযোগ থাকবে ।
লাইন-১-এর পূর্বাচলগামী অংশটি নতুন বাজার থেকে যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা হয়ে পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটি, মাস্তুল, পূর্বাচল পশ্চিম, পূর্বাচল সেন্টার, পূর্বাচল সেক্টর-৭ হয়ে পূর্বাচল টার্মিনাল পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ পূর্বাচল রুটে বিমানবন্দর রুটের অন্তর্ভুক্ত নতুন বাজার ও যমুনা ফিউচার পার্কের আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন দুটোসহ মোট স্টেশন থাকবে ৯টি। এরমধ্যে বসুন্ধরা থেকে পূর্বাচল টার্মিনাল পর্যন্ত ৭টি স্টেশন হবে এলিভেটেড ।
নির্মাণকাজ শেষে প্রতিদিন ৮ লাখ যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে। এই প্রকল্পে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৫টি ট্রেনে যাত্রী পরিবহন করা হবে। ৮ বগির ট্রেনগুলোর ধারণ ক্ষমতা ৩ হাজার ৮৮ জন। ২৪ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর, কমলাপুর থেকে ৪০ মিনিটে পূর্বাচল এবং ২০ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডে নতুনবাজার থেকে পূর্বাচলে যাবে ট্রেন। যানজট ও দূষণ নিরসনে রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকায় নির্মিতব্য ৬টি লাইনের মধ্যে দ্বিতীয় হবে এমআরটি-১। ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণ করা হবে ৬টি মেট্রো লাইন।
আবুল কাশেম ভূঁঞা বলেন, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর এই প্রকল্পের কাজ শুরুর কথা ছিল। ২০২৬ সালের মধ্যে পুরো কাজ শেষ হবে বলে আশা করি।
প্রকল্পের নথি বলছে, এমআরটি-১-এর ডিপো নির্মাণে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ৯৪০ কোটি টাকায় প্রায় ৯৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ৩১ শতাংশ জমির দখল বুঝে পেয়েছে মেট্রোরেলের নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সরকারি কোম্পানি ডিএমটিসিএল। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি জমি মেট্রো কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। মাটি ভরাটের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ২৬ জানুয়ারি নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। সরকার ও জাপানি সহযোগিতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা ঋণ দেবে। বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা জোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার।
গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) নির্মাণ তদারকি পরামর্শদাতা হিসেবে নিপ্পন কোই কোম্পানি লিমিটেডের (জাপান-জেভি) সঙ্গে চুক্তি সই করে। এ প্রতিষ্ঠান তাদের সেবার জন্য পাবে মোট ১ হাজার ৫১৭ দশমিক ২৪ কোটি টাকা।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।