ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২২
আরব্য সংস্কৃতিতে ফুটবল বিশ্বকাপের জমকালো উদ্বোধন
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২২, ০২:০৬

আলোগুলো নিভে যেতেই মায়াবী এক বিভ্রমে নিশ্চুপ হয়ে যায় গোটা স্টেডিয়াম। জায়ান্ট স্ট্ক্রিনে ভেসে আসে সমুদ্রের নীল জলে ভেসে চলা শার্কের দৃশ্য। বর্ণনায় কাতারের ইতিহাস। শিকারি পূর্বপুরুষের কথা। মরুর বুকে বেঁচে থাকার সংগ্রামের কথা।
বিশ্বকাপের বোধনে নিজেদের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্য সুনিপুণভাবে তুলে ধরেছে কাতার। লেজার শো, থ্রিডি লাইট আর আতশবাজিতে গোটা অনুষ্ঠানটিতে সেই আরব্য রজনির গল্পই যেন ফুটে উঠেছে।
আসলে কাতারের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সঙ্গে সদ্য সম্প্রতি রাশিয়া বিশ্বকাপ কিংবা ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকার তুলনা করলে কোনোভাবেই দশে পাঁচের বেশি দেওয়া যাবে না। স্থানীয় শিল্পীর দুটি গান আর পশ্চিম ইউরোপের অ্যাক্রোবেট শিল্পীদের দিয়ে কিছু কসরত।
প্রযুক্তি বলতে অ্যাক্রোবেটদের গায়ে কিছু থ্রিডি লাইট। তাতে নিভু নিভু আলোতে শুরুতে যে বিভ্রম হয়েছিল, তা কেটে যায় দ্রুত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কোরিয়ান জনপ্রিয় ব্র্যান্ড বিটিসির জাংকুক। ভীষণ জনপ্রিয় এই কোরিয়ান শিল্পীই মঞ্চ মাতিয়েছেন এবারের বিশ্বকাপের থিম সং 'দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ ইয়োরস টু টেক'।
বলিউড তারকা নোরা ফাতেহি ও আমেরিকান গায়ক লিল বেবির গানও বাজল মাঠজুড়ে। তবে সেটা জায়ান্ট স্ট্ক্রিনেই। অথচ তাঁদের লাইভ পারফর্ম করার কথা ছিল। অনুষ্ঠানে যে বিশ্বকাপের রং কম ছিল সেটা বোধহয় আয়োজকরাও বুঝেছিলেন। তাই শেষ মুহূর্তে বাজানো হয়েছিল ২০১০ বিশ্বকাপের জনপ্রিয় গান শাকিরার 'ওয়াকা .. ওয়াকা ...'।
এমনকি ১৯৯৮ সালে রিকি মার্টিনের 'ওলে .. ওলে ...'ও বাজানোর সময়েও গ্যালারি আলোড়িত হয়েছিল।ফুটবল বিশ্বের কাছে ভ্রাতৃত্বের বার্তা দিয়ে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি উদ্বোধনের ঘোষণা দেন মরু বিশ্বকাপের। গোটা গ্যালারি হর্ষোল্লাসে তাঁকে সমর্থন জানান। সবাই যেন বুঝিয়ে দেন মরুর বিশ্বকাপে বিনোদন হবে শুধুই ফুটবলে।
স্বপ্নপূরণ হলো কাতারের। ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে তাদের যে যুদ্ধ ছিল কয়েক বছর ধরে, সে যুদ্ধে জিতেই গেল তারা। পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিল পরিশীলিত ও পরিচ্ছন্ন এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করে। নাচ, গান সবই ছিল। কিন্তু সবটাতেই ছিল পরিমিতি। কমতি ছিল না রং, উচ্ছ্বাস আর আবেগে। আরবে প্রথম বিশ্বকাপের শুরুটা এমন হতে পারে, সেটি কল্পনার অতীত ছিল।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।