বিশ্ব রক্তদাতা দিবস
সুজন হাসান | প্রকাশিত: ১৫ জুন ২০২৪, ১২:৫০

১৪ জুন বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। এ বছর এই দিবস পালনের দুই দশক পূর্ণ হচ্ছে। নোবেলবিজয়ী জীববিজ্ঞানী ও চিকিৎসক কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ১৯০০ সালে প্রথম রক্তের গ্রুপ আবিষ্কার করেন। এটি চিকিৎসাশাস্ত্রে অনন্য একটি আবিষ্কার। তার প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার জন্মদিন ১৪ জুনকে এ দিবস পালনের জন্য বেছে নেয়।
বিশ্ব রক্তদাতা দিবস পালন করা হয় কার্ল ল্যান্ডস্টেইনারের জন্মবার্ষিকীতে। এই বিখ্যাত গবেষক আধুনিক ব্লাড ট্রানফিউশনের জন্মদাতা। তাকে বলা হয় ‘ফাদার অব মডার্ন ব্লাড ট্রানসফিউশন’। প্রসঙ্গত কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার একজন অস্ট্রিয়ান বায়োলজিস্ট অর্থাৎ প্রাণিবিদ। একই সঙ্গে তিনি চিকিৎসকও ছিলেন। ১৮৬৮ সালে জন্মের পর ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। এর পর ঢুকে পড়েন ডাক্তারি পেশায়। সেখানে থাকতে থাকতেই আধুনিক ব্লাড ট্রান্সফিউশন বা রক্তদান পদ্ধতির জন্ম দেন তিনি।
আন্তর্জাতিকভাবে এ বছর বিশ্ব রক্তদাতা দিবসের বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজক দেশ ইতালি। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের উদ্বুদ্ধ করতে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে দিনটি।
২০০৪ সাল থেকে এই দিনটির আনুষ্ঠানিক শুরু হয়। বিশ্বের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সংস্থা ছিল এই উদ্যোগের পেছনে। মূলত চারটি সংগঠনের উদ্যোগেই শুরু হয় বিশ্ব রক্তদাতা দিবস পালন। এর মধ্যে ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিস, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ব্লাড ডোনার অরগ্যানাইজেশন ও ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব ব্লাড ট্রান্সফিউশন। ২০০৫ সালে এই চার সংস্থার উদ্যোগে প্রথম একটি গ্লোবাল ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। ৫৮তম ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসেম্বলির সময় এই বিশেষ ইভেন্টটি হয়েছিল।
আমাদের দেশেও দিবসটি পালনে সরকারি নানা উদ্যোগের পাশাপাশি এবারও এগিয়ে আসছে সাড়ে চার লক্ষাধিক সুসংগঠিত ডোনার পুল নিয়ে গঠিত ‘কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন’। এদিন বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে দেশে প্রথমবারের মতো দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক রক্তদাতা ও দুই শতাধিক থ্যালাসেমিক রক্তগ্রহীতার মিলনমেলা এবং বিশেষ সেমিনারের আয়োজন করছে কোয়ান্টাম। স্বেচ্ছায় রক্তদাতারা নীরবে তাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ রক্ত দান করে যান।
প্রতি বছর রক্তদাতা দিবসের একটি বিশেষ থিম থাকে। এ বছর বিশ্ব রক্তদাতা দিবস ২০২৪-এর থিম হল- রক্তদিন, জীবন বাঁচান! রক্তদিলে, জীবন মিলে! Give Blood, Give Plasma, Share Life, Share Often.
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। দেশে রক্তের চাহিদা পূরণে স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে থাকছে নানা কর্মসূচি।
এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে- ‘রক্ত দান করুন, দান করুন প্লাজমা, যতবার সম্ভব গ্রহণ করুন জীবন বাঁচানোর এ অনন্য সুযোগ’।
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ ব্যাগ রক্ত ও রক্তের উপাদানের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে কোয়ান্টাম বছরে সরবরাহ করে এক লক্ষাধিক ব্যাগ। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুই দশকের যাত্রায় কোয়ান্টাম গড়ে তুলেছে বছরে ৪ লাখ ৭৪ হাজার স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সুসংগঠিত ডোনার পুল। আর জীবন বাঁচানোর জন্যে এ পর্যন্ত সরবরাহ করেছে ১৫ লাখেরও বেশি ইউনিট রক্ত ও রক্তের উপাদান।
বিষয়: বিশ্ব রক্তদাতা দিবস
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।