২০২৪ সালের যাত্রাবাড়ী গণহত্যা: গুলি, রক্ত আর ৫২টি প্রাণের গল্প
নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৯ জুলাই ২০২৫, ১৬:২৫

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট—ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ঘটে যায় এমন এক ঘটনা, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ পুলিশি সহিংসতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। বিবিসির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে—সেদিন পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে ৫২ জন সাধারণ মানুষ নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের মূল ভিডিও, ছবি, এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য প্রকাশ করেছে বিবিসি আই।
সেদিন বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন শিক্ষার্থীরা। ৩৬ দিনের লাগাতার আন্দোলনের সেই চূড়ান্ত দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভারতে পালিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরই যাত্রাবাড়ী থানার ভেতর থেকে পুলিশ আচমকা গুলিবর্ষণ শুরু করে।
এক আন্দোলনকারীর মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওতেই ধরা পড়ে নির্বিচার গুলির শুরুর মুহূর্ত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ওই ভিডিওধারী মিরাজ হোসেন নিজেও সেদিন নিহত হন।
ভিডিওর মেটাডেটা বিশ্লেষণে দেখা যায়—বিকেল ২টা ৪৩ মিনিটে গুলি শুরু হয় এবং প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলে এই হত্যাকাণ্ড। ড্রোন ফুটেজে দেখা যায়, গুলির পর রাস্তায় ছড়িয়ে আছে নিহত ও আহতদের দেহ, আর আন্দোলনকারীরা ভ্যান, রিকশা আর বাইকে করে তাদের হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
বিবিসির অনুসন্ধানে আরও প্রমাণ মেলে—ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও আসলে ৫ আগস্টের নয়, বরং আগের দিনের, ৪ আগস্টের। বিকেলের ওই গুলিবর্ষণে শুধুই বিক্ষোভকারীরা নয়, পাল্টা হামলায় ছয়জন পুলিশ সদস্যও নিহত হন।
পুলিশ ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে এবং বলছে—ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। যাত্রাবাড়ীর রক্তাক্ত বিকেল আরেকবার প্রমাণ করল—দমনপীড়নের শেষ হয় না, সত্য একদিন সামনে এসেই পড়ে। প্রশ্ন এখন একটাই—এই ৫২ প্রাণের বিচার আদৌ হবে তো?
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।