অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ
৫ আগস্টের পর দেশে চাঁদাবাজির বেড়েছে
স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশিত: ১ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:০৭

গত বছরের ৫ আগস্টের পর দেশে চাঁদাবাজির প্রবণতা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। রাজনৈতিক কমিটমেন্ট ছাড়া, রাজনৈতিক সরকার ছাড়া এই সংকট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।”
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, আগে যেখানে এক টাকা চাঁদা নেওয়া হতো, এখন সেখানে দেড় বা দুই টাকা নেওয়া হচ্ছে। ৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন পক্ষ এতে জড়িয়ে পড়েছে। এমনকি যারা আগে যুক্ত ছিল না, তারাও এখন আছে। অনেক চাঁদাবাজ আবার ব্যবসায়ী সংগঠনেরও সদস্য।
তিনি বলেন, “চাঁদাবাজির কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা আমার মন্ত্রণালয়ের কাজ না। আর অন্তর্বর্তী সরকার ‘একে ধরো, ওকে ধরো’ নীতিতে চলছে না।”
ড. সালেহউদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, আগামী জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের একটি অংশ আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ফেরত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “টাকা যারা পাচার করে, তারা খুবই কৌশলী। বিষয়টি জটিল। তবে কিছু অগ্রগতি হয়েছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে কিছু অর্থ ফেরার সম্ভাবনা আছে।”
তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তথ্য সংগ্রহ করছে। এরই মধ্যে কিছু বিদেশি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। তবে পাচারের সঠিক অঙ্ক জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, “এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলতে পারবেন।”
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে আগামী ডিসেম্বরে।
তিনি বলেন, “আমরা নভেম্বরে চালুর অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তবে রাশিয়া জানিয়েছে, ডিসেম্বরে চালু করবে। ইতিমধ্যে জ্বালানি এসে গেছে। আইএইএ’র কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন চলছে।”
কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম এখনো নির্ধারণ হয়নি বলেও জানান তিনি।
আগামী সরকারের মন্ত্রী হওয়ার কোনো আগ্রহ নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “উপদেষ্টা হওয়ার আগে আমি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে পড়াতাম। এখনো তারা আমার রুম রেখেছে, গাড়িও ফেরত নেয়নি। মাঝে মাঝে ড্রাইভার ফোন দিয়ে জানতে চায়, স্যার গাড়ি আনব কিনা—এটাই আমার বড় স্বস্তি।”
দেশে এখনো শিশু ও মায়েদের মধ্যে পুষ্টিহীনতা রয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১০টি পরিবারের মধ্যে তিনটি পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।”
তিনি আরও বলেন, চালের ওপর নির্ভরতা বেশি এবং আমিষ গ্রহণ কম হওয়ায় সমস্যা রয়ে গেছে। “ডিমের মতো আমিষ এখনো অনেকেই কিনতে পারছে না,” মন্তব্য করেন তিনি।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।